ঢাকা , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ , ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গোয়ালন্দে পদ্মায় ভাঙন শুরু, আতঙ্কে শতাধিক পরিবার

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক
আপলোড সময় : ০৭-১০-২০২৪ ১০:২৬:২২ পূর্বাহ্ন
আপডেট সময় : ১২-১০-২০২৪ ০৭:৩৯:১৬ অপরাহ্ন
গোয়ালন্দে পদ্মায় ভাঙন শুরু, আতঙ্কে শতাধিক পরিবার
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার পদ্মা তীরবর্তী দেবগ্রাম ইউনিয়নের মুন্সি বাজার এলাকায় ফের নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। একদিনেই অন্তত ৫০ মিটার কৃষি জমি পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে। এতে করে ভাঙন আতঙ্কে পড়েছেন কয়েকশ পরিবার।

রোববার বিকেলে দেখা যায়, বেশ কয়েকটি বাড়ি ভেঙে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। ভাঙন আতঙ্কে শত শত পরিবার নদীর পারে দিন কাটাচ্ছেন। ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীনের আগেই ৭-৮ টি পরিবার ঘরবাড়ি ভেঙে অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে।
এখানে যারা বসবাস করে তাদের অধিকাংশ কয়েক দফা নদী ভাঙনের শিকার হয়ে এখানে বসবাস করছিলেন। অনেকেরই ছিল মাঠে শত বিঘা ফসলি জমি, গোয়ালে গরু আর গোলা ভরা ধান। এখন এগুলো সবই স্মৃতি।

এই রান্না হয়তো শেষ রান্না 
এই এলাকায় বাস করা মর্জিনা আক্তার নামে এক নারী বলেন, স্বামীর এই বসত ভিটায় আর হয়তো থাকতে পারবো না। এই রান্না হয়তো শেষ রান্না। এই রান্না আমি শেষ করতে নাও পারি। কারণ নদী ভাঙন শুরু হলে দৌড়ে পালানো লাগবে। সারা রাত ঘুমাই না, জেগে থাকি, কখন যেন এই বসতভিটা নদীতে চলে যায়। অশ্রু ভেজা দৃষ্টি নিয়ে এই নারী আরও বলেন, ঘরে দুই শিশু সন্তান আছে, স্বামীর শেষ সম্বল জায়গাটুকু সেটাও নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে। এখন আমরা কোথায় যাবো, কী খাবো একমাত্র ওপরওয়ালা জানে। 

একই এলাকার সালাম সরদার বলেন, সব হারানোর পথে। আমার সব শেষ। এই বাড়ি নদীতে চলে গেলে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে কোথায়ও দাঁড়ানোর জায়গা নেই। সারারাত ঘুম হয় না। কোথায় গিয়ে, কী করে চলবো। 

এক রাতেই সুরুজ ফকির নামে এক ব্যক্তির দশ কাঠা ফসলি জমি পদ্মার বুকে বিলীন হয়ে গেছে। তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েছেন, হয়তো রাতেই তার আরও কিছু জমি হারিয়ে যাবে পদ্মায়। তিনি বলেন, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে মিনতি তারা যেন ব্যবস্থা নেয়। তা না হলে আমরা নিঃস্ব হয়ে যাবো। দেবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলাম বলেন, ইতোমধ্যে উপজেলা থেকে একটি প্রতিবেদন চেয়েছে এ ব্যাপারে। আগামীকাল সকালে সেটা জমা দিব। দীর্ঘদিন ধরে নদী ভাঙন চলছে। দীর্ঘ মেয়াদি প্রকল্প না নিলে মানচিত্র থেকে দেবগ্রাম ইউনিয়ন পুরোপুরি হারিয়ে যাবে। গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র বলেন, ভাঙনের খবর শোনা মাত্রই আমি ভাঙন কবলিত স্থানগুলো পরিদর্শন করেছি। ভাঙন রোধে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে আমি ঊর্ধ্বতনদের জানিয়েছি।

রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী এম. এ. শামীম বলেন, আমরা ভাঙন কবলিত জায়গা পরিদর্শন করেছি। ভাঙনের বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা আমাদের যেভাবে নির্দেশনা দেবে আমরা পরবর্তীতে সেভাবে কাজ করবো।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dinajpur TV

কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ